জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ঘটনা ও পরিকল্পনা কি ছিলো? শিবিরের ভুমিকা নিয়ে এবার ফেসবুকে পোস্ট করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী জেলা পূর্বের সভাপতি মো রুবেল আলী৷ তার দেয়া ফেসবুক পোস্ট তুলে ধরা হলো।
৩৬ জুলাই
এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর যখন শুনলাম খুনি হাসিনা পালাইছে রাজশাহী তালাইমারিতে তোলা ছবি। প্রায় প্রত্যেকদিন আন্দোলন পরিচালনা নিয়ে জুম মিটিং করা হয়।
জেলা সভাপতি হিসেবে জুম মিটিং এ অংশগ্রহণ করতাম। ৪ আগস্ট পুনরায় নেট বন্দ করে দেয়। আগেরদিন সিদ্ধান্ত ছিল ৫ আগস্ট তালাইমারি হতে বাজারের দিকে মিছিল যাবে নেট সমস্যার মধ্যে থানাশাখাগুলোকে জানালাম সময় মত তালাইমারিতে পৌঁছাতে হবে। সারা রাত তেমন ঘুম নেই। মামলা হয়েছে পুলিশ খোঁজ করছে চারিদিকে থৈথৈ অবস্থা।
সংগঠন নিষিদ্ধ কিছু জনশক্তি গেফতার চারিদিকে আতঙ্ক কোথাও নিরাপদ জায়গা পাচ্ছি না এক বাসায় থাকি সেই স্থানটাও রাতে ত্যাগ করা লাগলো। অন্য একটা বাসায় সাবেক জেলা সভাপতি ইব্রাহিম মোল্লা ভাইয়ের সাথে থাকলাম।
সকালে উঠে জনশক্তিদের নিয়ে তালাইমারিতে সবার আগেই পৌছালাম। অন্যদিনের তুলনায় আজকে আন্দোলের স্প্রিট আরো শক্তিশালী ছিল। মিছিল বাজারের দিকে যেতেই আলুপট্টিতে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ প্রশাসন পক্ষ থেকে আমাদের উপরে গুলি আর ধারালো অস্ত্রনিয়ে ঝাপিয়ে পরল। চোখের সামনে গুলিতে নেতিয়ে পরেন শহীদ আলী রাইহান ভাই। ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া চলমান অনেকে আহত হয়। চারিদিকে অন্ধকার মনে হচ্ছে, সামনে গুলি পিছনে গুলি । মনে হচ্ছে আজকেই শহীদ হয়ে যাবো। বুলেটের শব্দ কানের পাস দিয়ে শ শ করছে।
সেদিন ছাত্রদল,ছাত্রশিবির,অন্যন্য সংগঠন,সাধারণ ছাত্র সবাই হাতে হাত রেখে যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলাম।আমার শাখার ৩ জন ভাই আহত হয়। মিছিল পিছনের দিকে তালাইমারিতে পুনরায় চলে আসে সেখানে কিছু সময় অপেক্ষা করতেই শুনতে পাই খুনি হাসিনার পালানোর সংবাদ। আনন্দে সিজজায় মাটিতে লুটিয়ে পরি। অনেক জনশক্তি তখনও নিখোঁজ সবাইকে খোজ করে ছবিগুলো তোলা। ক্লান্ত,ক্ষুধার্ত হঠাৎ কে যেনো এক টুকরা পিয়ারা দিয়েছে বসে খাচ্ছি আর ভাবছি সূরা ইমরানের ২৬ নং আয়াতের কথা বল, ‘হে আল্লাহ, রাজত্বের মালিক, আপনি যাকে চান রাজত্ব দান করেন, আর যার থেকে চান রাজত্ব কেড়ে নেন এবং আপনি যাকে চান সম্মান দান করেন। আর যাকে চান অপমানিত করেন, আপনার হাতেই কল্যাণ। নিশ্চয় আপনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান’।